বাজিতপুর নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে দু’টি জনশ্রæতি আছে। তন্মধ্যে প্রথমটি হলো মুগল আমলে বায়েজিদ খাঁ নামক জনৈক রাজ কর্মচারী ও তার অপর তিন ভ্রাতা ভাগল খাঁ, পৈলন খাঁ ও দেলোয়ার খাঁসহ দিল্লী থেকে এসে এখানে (বাজিতপুর) অবস্থান করেন। কিছুদিন পর তারা বাজিতপুর এর আশেপাশে ০৪ টি স্থানে স্ব-স্ব বাসস্থান ঠিক করে নেওয়ার পর বায়েজিদ খাঁর বাসস্থানের নামে বায়েজিদপুর পরে উচ্চারণ বিবর্তনে তা হয় বাজিতপুর। এই রূপে ভাগল খাঁর নামে ভাগলপুর, পৈলন খাঁর নামে পৈলনপুর ও দেলোয়ার খাঁর নামে দিলালপুর বলে পরিচিতি লাভ করে।
দ্বিতীয় প্রকাশে জনশ্রæতি আছে, বায়েজিদ খাঁ নামক মুগল সেনাপতিকে নাকি প্রেরণ করা হয়েছিল হাওড় অঞ্চলে ঈশা খাঁর অগ্রগতিকে রোধ করার জন্য। ঈশা খাঁ তখন অবস্থান নেন হাওড় এলাকার নদী পরিবেষ্টিত ঘাগড়া অঞ্চলে। তখন বায়েজিদ খাঁ অবস্থান নেন ঘোড়াউত্রা নদী হতে দুই মাইল পশ্চিমে বর্তমান বাজিতপুরে। তবে তিনি ঈশা খাঁর সাথে কখনও কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন কিনা কিংবা হলেও যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল সে সম্বন্ধে কোন বিস্তারিত ইতিহাস না থাকায় এটি তেমন বিশ্বাস বা সমর্থনযোগ্য বলে মনে হয় না। আর তাছাড়া এখানে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের কোন নিদর্শন পাওয়া যায় নাই। অস্থায়ী বাসস্থানকে প্রথমে বায়েজিদপুর পরে বাজিতপুর নামে ডাকা শুরু হতে পারে। তবে প্রথম জনশ্রæতিটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়।
বাজিতপুর পৌরসভার প্রথম মুসলিম প্রেসিডেন্ট ঃ
সৈয়দ নজমুল হুদা দিলালপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ নুরুল হুদা ছিলেন বাজিতপুর পৌরসভার প্রথম মুসলিম প্রেসিডেন্ট। সৈয়দ নজমুল হুদা ছিলেন বাজিতপুর উপজেলার প্রথম মুসলিম বি.এ.বি.টি.। তিনি ইংরেজী ভাষায় নানাবিধ প্রবন্ধ রচনা করে যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেন।
আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম ঃ
বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পপতি আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম বাজিতপুর পৌরসভার ০৬ নং ওয়ার্ড ভাগলপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধাবলে তিনি বাংলাদেশের শিল্প ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য অর্জন করে আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতি লাভ করেন। শিল্প ক্ষেত্র ছাড়াও তার অবদান অসামান্য। জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আফতাব উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ, বেগম রহিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রাজ্জাকুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাজিরুল ইসলাম কলেজিয়েট স্কুল এবং বাজিতপুর ডিগ্রী কলেজসহ বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।